DEV Community

Imran Khan
Imran Khan

Posted on

সুন্দরবন: জলে-জঙ্গলে ঘেরা এক রহস্যময় রাজ্য

চোখ বন্ধ করে কল্পনা করুন... সকালের কুয়াশায় ঢাকা এক অন্তহীন সবুজের জগৎ। নদীর জলে আঁকাবাঁকা শিকড় যেন প্রকৃতির অদ্ভুত এক শিল্পকর্ম। বাতাসে লবণাক্ততার গন্ধ আর কাদামাটির স্নিগ্ধ গন্ধ। হঠাৎই দূর থেকে ভেসে আসে চিত্রা হরিণের সতর্কবার্তা, মুহূর্তে গোটা জঙ্গল যেন নিথর হয়ে যায়। হয়তো কোনও গাছের আড়ালে, সেই লাজুক রাজা-বাঘই আপনাকে লক্ষ্য করছে! এ কোনও আফ্রিকার সাভানা নয়, অ্যামাজনের জঙ্গলও নয়, এ হলো সুন্দরবন – পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন, বাংলার গর্ব, এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগারের শেষ আশ্রয়স্থল।

সুন্দরবন কেন এত বিশেষ?

সুন্দরবন শুধু একটি সুন্দর বনই নয়, এটি এক জীবন্ত, স্পন্দমান প্রাণের জগৎ।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ অরণ্য: গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদী বঙ্গোপসাগরে পড়ে যে ব-দ্বীপ সৃষ্টি করেছে, তাই এই অপার সৌন্দর্যের জন্ম দিয়েছে।

বাঘের রাজ্য: বিশ্বের একমাত্র জায়গা যেখানে বাঘেরা লবণাক্ত পানির ম্যানগ্রোভ বনে বাস করতে শিখেছে। তারা সাঁতারে ওস্তাদ, বড় বড় নদী পাড়ি দেয় এবং জোয়ার-ভাঁটার ছন্দ মেনে চলে।
প্রাণবৈচিত্র্যের ভাণ্ডার: বাঘ ছাড়াও এখানে রয়েছে চিত্রা হরিণ, বন্য শূকর, কুমির, নানান প্রজাতির বানর, অজস্র পাখি (যেমন- মাছমুরাল, সাদা বাজ) এবং সরীসৃপ।
ইউনেস্কো বিশ্ব heritage site: প্রকৃতির এই অনন্য সৃষ্টি বিশ্ব heritage site-এর মর্যাদা পেয়েছে।

কখন যাবেন?
সেরা সময় (অক্টোবর থেকে মার্চ): এই সময়টা ভ্রমণের জন্য আদর্শ। শীতল ও শুষ্ক আবহাওয়া থাকে। বন্যপ্রাণী দেখার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় ফটোগ্রাফির জন্য উপযুক্ত।

এড়িয়ে চলুন (এপ্রিল থেকে জুন এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর): গ্রীষ্মকাল (এপ্রিল-জুন) প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্র থাকে। বর্ষা মৌসুমে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা থাকে, অনেক এলাকা পানিতে ডুবে যায়, এবং পর্যটন কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

Top comments (0)