DEV Community

Cover image for মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা এবং কি কি কাগজপত্র লাগে?
RONiB
RONiB

Posted on • Edited on

মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা এবং কি কি কাগজপত্র লাগে?

মোটরসাইকেল চালানোর জন্য একটি বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধু আইন মেনে চলার জন্যই নয়, রাস্তায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৫ সালে মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া, ফি এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে এই আর্টিকেলে সহজভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।

ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ধাপসমূহ

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের জন্য দুইটি প্রধান ধাপ অনুসরণ করে:

১. লার্নার লাইসেন্স
২. স্থায়ী স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স

ধাপ ১: লার্নার লাইসেন্স

লার্নার লাইসেন্স হলো মোটরসাইকেল চালানোর প্রাথমিক অনুমতি, যা আপনাকে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয়। এটি পাওয়ার জন্য যা করতে হবে:

  • আবেদন ফরম পূরণ: বিআরটিএ’র নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হবে। এটি বিআরটিএ’র ওয়েবসাইট (http://bsp.brta.gov.bd) বা স্থানীয় অফিস থেকে পাওয়া যায়।
  • কাগজপত্র জমা: প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিচে উল্লেখ করা হয়েছে।
  • ফি পরিশোধ: নির্ধারিত ফি ব্যাংকে জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করতে হবে।
  • আবেদন দাখিল: আপনার বর্তমান বা স্থায়ী ঠিকানার নিকটস্থ বিআরটিএ অফিসে আবেদন জমা দিন।
  • লাইসেন্স ইস্যু: আবেদন যাচাইয়ের পর লার্নার লাইসেন্স দেওয়া হবে, যা সাধারণত ২-৩ মাসের জন্য বৈধ। এই সময়ে আপনাকে ড্রাইভিং শিখতে হবে।

ধাপ ২: স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স

লার্নার লাইসেন্সের মেয়াদে প্রশিক্ষণ শেষ করে স্থায়ী লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। এর ধাপগুলো হলো:

  • পরীক্ষা: লিখিত, মৌখিক এবং ব্যবহারিক (ফিল্ড) পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। ফিল্ড পরীক্ষায় মোটরসাইকেল চালানোর দক্ষতা পরীক্ষা করা হয়।
  • আবেদন ফরম: পরীক্ষায় পাস করার পর নতুন ফরমে স্মার্ট কার্ড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে।
  • বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ: ছবি, আঙুলের ছাপ এবং ডিজিটাল স্বাক্ষর নেওয়া হবে।
  • ফি জমা: স্মার্ট কার্ডের ফি ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
  • লাইসেন্স প্রদান: সবকিছু ঠিক থাকলে স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট করে বিআরটিএ অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এসএমএসের মাধ্যমে সংগ্রহের সময় জানানো হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

লার্নার লাইসেন্সের জন্য

১. আবেদন ফরম: পূরণকৃত ফরম।
২. জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি): মূল এবং ফটোকপি।
৩. মেডিকেল সনদ: রেজিস্টার্ড ডাক্তারের স্বাক্ষরসহ নির্ধারিত ফরম।
৪. ছবি: ৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজ এবং ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
৫. ঠিকানার প্রমাণ: বিদ্যুৎ/গ্যাস বিল বা ভোটার তালিকার ফটোকপি।
৬. ফি’র রশিদ: ব্যাংকে ফি জমার প্রমাণ।

স্মার্ট কার্ড লাইসেন্সের জন্য

১. আবেদন ফরম: পূরণকৃত নতুন ফরম।
২. লার্নার লাইসেন্স: মূল কপি।
৩. পরীক্ষার ফলাফল: লিখিত, মৌখিক এবং ফিল্ড টেস্টে উত্তীর্ণের প্রমাণ।
৪. ছবি: ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ এবং ১ কপি স্ট্যাম্প সাইজ ছবি।
৫. জাতীয় পরিচয়পত্র: ফটোকপি।
৬. ফি’র রশিদ: স্মার্ট কার্ডের ফি জমার প্রমাণ।

ফি’র পরিমাণ

২০২৫ সালে মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি নিম্নরূপ:

লার্নার লাইসেন্স

  • শুধু মোটরসাইকেল: প্রায় ৩৪৫ টাকা।
  • মোটরসাইকেল ও হালকা যান: প্রায় ৫১৮ টাকা।

স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স

  • অপেশাদার লাইসেন্স (১০ বছর মেয়াদ): প্রায় ২,৫৪২ টাকা।
  • পেশাদার লাইসেন্স (৫ বছর মেয়াদ): প্রায় ১,৬৮০ টাকা।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চার্জ বা সার্ভিস ফি’র কারণে মোট খরচ ৪,০০০ টাকার বেশি হতে পারে। সঠিক তথ্যের জন্য বিআরটিএ’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা অফিসে যোগাযোগ করুন।

জানা জরুরি

  • বয়সসীমা: অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য ন্যূনতম ১৮ বছর এবং পেশাদার লাইসেন্সের জন্য ২০ বছর।
  • প্রশিক্ষণ: লার্নার লাইসেন্সের সময়ে ২-৩ মাসের প্রশিক্ষণ নিতে হবে। বিআরটিএ স্বীকৃত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে শিক্ষা নেওয়া ভালো।
  • পরীক্ষার বিষয়বস্তু: ফিল্ড পরীক্ষায় ট্রাফিক নিয়ম মানা, নিরাপত্তা এবং চালনার দক্ষতা যাচাই করা হয়।
  • অনলাইন সুবিধা: বিআরটিএ’র বিএসপি পোর্টালে অনলাইনে আবেদন করা যায়, যা সময় ও ঝামেলা কমায়।
  • জরিমানা এড়ানো: লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল চালালে জরিমানা বা আইনি পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হবে।

মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স শুধু আইনি নিয়ম মেনে চলার জন্য নয়, এটি আপনার দক্ষতা ও নিরাপত্তার প্রতীক। ২০২৫ সালে বিআরটিএ’র নির্দেশনা মেনে সঠিক কাগজপত্র ও ফি দিয়ে সহজেই লাইসেন্স পাওয়া সম্ভব। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেকে প্রস্তুত করুন এবং বৈধ লাইসেন্স নিয়ে নিরাপদে মোটরসাইকেল চালান।

সতর্কতা: ফি এবং প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন হতে পারে। সর্বশেষ তথ্য জানতে বিআরটিএ’র ওয়েবসাইট বা নিকটস্থ অফিসে যোগাযোগ করুন।

Top comments (0)