ক্লাউড সার্টিফিকেশন এর উপর ডেডিকেটেড পড়াশোনা করতে গিয়ে একটা উপলব্ধি হইছে। সেটা হল, ক্লাউড এক্সপার্ট হওয়ার জন্য ক্লাউড একাউন্ট থাকা আসলে প্রথম শর্ত না। আপনি সত্যিকারভাবে আগ্রহী হলে ক্লাউড একাউন্ট ছাড়াই মোটামুটি ক্লাউড কনসেপ্ট গুলো ধরতে পারবেন, ক্লাউডে মোটামুটি এক্সপার্ট লেভেলে নিজেকে নিতে পারবেন। নিচে আমি কিছু টপিক্স দিচ্ছি ব্যাখ্যাসহ যেগুলো আপনারা এখন থেকেই পড়া শুরু করতে পারেন।
১। নেটওয়ার্কিংঃ
পুরো ক্লাউড হল একটা বিশাল বিস্তৃত নেটওয়ার্কিং এর আউটপুট। এখানে বিভিন্ন রকমের সার্ভিস একে অপরের সাথে কথা বলতেছে। কীভাবে একটা ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক এর মধ্যে কয়েকটা সার্ভিস ন্যাট আইপি নিচ্ছে, এমনকি আলাদা ক্লাউড ভেন্ডর-রাও কীভাবে একে অপরের সাথে নেটওয়ার্কিং করে সেটাও একটা ইন্টারেস্টিং কনসেপ্ট। জাস্ট ব্যান্ডউইথ এর বিল দিয়েই আপনি ফতুর হয়ে যেতে পারেন, তাই ব্যান্ডউইথ কীভাবে অপটিমাইজ করা যায় সেটা নিয়ে জানা তো ক্লাউড এর সাথে জড়িত না। তারপর, কীভাবে আইপি, ডোমেইন নেম, সাবডোমেইন একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত সেটা তো কমন নলেজ।
কীভাবে আপনি আপনার বাসার আইপি থেকে আপনার ক্লাউড ভার্চুয়াল মেশিনে রিমোট লগইন করতে পারবেন (আইপি, পোর্ট এগুলোর কম্বিনেশন) আর কেন অন্যকেউ পারবে না, সেটা কীভাবে ম্যানেজ হচ্ছে, এসব জানা কিন্তু ক্লাউড একাউন্ট থাকা বা না থাকার সাথে সম্পর্কযুক্ত না। ঠিক না?
২। এপ্লিকেশন কে জানাঃ
আপনার সাধারণ একটা এপ্লিকেশন কত মেগা র্যাম খায়, কত সিপিইউ খায়, একসাথে কত রিকুয়েস্ট হ্যান্ডেল করতে পারে সেগুলো জানার জন্য কিন্তু আপনার ক্লাউড একাউন্ট থাকা দরকার নাই। এগুলো আপনার পিসিতে বসেই কোন এপ প্রোফাইলার দিয়ে বুঝতে পারবেন। কীভাবে এগুলোকে আরো বেশী পার্ফরম্যান্ট করা যায় সেগুলো নিয়ে আপনাকে পড়াশোনা করতে হবে। একেবারে শেষে গিয়ে যখন হোস্ট করবেন, তখন আপনার ক্লাউড একাউন্ট লাগবে। ক্লাউড একাউন্ট নাই বলে এপ্লিকেশন পার্ফরম্যান্ট করতে পারবেন না এটা একটা ভুয়া যুক্তি। ঠিক না?
৩। ডাটাবেজ কে জানাঃ
আপনার ওআরএম ফ্রেমওয়ার্ক কীভাবে কুয়েরি জেনারেট করতেছে, আপনার ডাটাবেজ সার্ভার কত গিগা র্যাম নিচ্ছে, লোড পড়লে কত গিগা লাগতেছে, তারপর সময় কত নিচ্ছে একটা কমপ্লেক্স কুয়েরি এক্সিকিউট করতে সেগুলোকে জানা, এবং সমস্যা গুলো সমাধান করার জন্য আপনার কখনোই ক্লাউড একাউন্ট থাকা লাগবে না। এগুলো আপনাকে জানতে কে আটকে রাখতেছে?
৪। লগিংঃ
আপনার কোড এর লগ গুলো কীভাবে জেনারেট হচ্ছে, কীভাবে আপনি ট্রাবলশুট করবেন সেটা বোঝা এবং প্রিপারেশন নেয়ার জন্য তো আপনার ক্লাউড এর লগিং সিস্টেমই লাগবে সেটা তো ঠিক না। আপনি এমনভাবে কোড ডিজাইন করবেন যেন মিনিমাম চেঞ্জ এ আপনি লগিং প্রোভাইডার চেঞ্জ করতে পারেন। আর লোকালি আপনি ফ্রি এবং ওপেন সোর্স লগিং সিস্টেম দিয়ে আপনার সিস্টেমকে চেক করে দেখবেন। কেন ক্লাউড একাউন্ট দিয়েই এগুলো করা লাগবে?
৫। ক্লাউড স্পেসিফিক সিস্টেমঃ
এযুর এর ফাংশন লোকালি চালাইতে পারবেন, আপনার একাউন্ট থাকা লাগবে না। এরকম প্রতিটা ক্লাউড এরই প্রচুর সিস্টেম লোকালি চালানো যায়। সুতরাং ক্লাউড একাউন্ট বানিয়েই ক্লাউড প্র্যাকটিস করা লাগবে সেই চিন্তা একটা বোকা মানুষের চিন্তা।
৬। ডেভঅপ্সঃ
মাইক্রোসফট ডেভপ্স এর ফুল সাইট (dev.azure.com) একেবারে ফ্রি। আপনি টাস্ক ম্যানেজ, রিপো ম্যানেজ, কন্টিনিউয়াস ইন্টিগ্রেশন এগুলো একেবারে হাতেকলমে প্র্যাকটিস করতে পারতেছেন বিনা পয়সায়। কন্টিনিয়াস ডেলিভারি হ্যান্ডেল করার জন্য আপনার একটা হোস্টিং প্ল্যাটফর্ম লাগবে, কিন্তু সেটা একেবারে শেষ স্টেপ। এই স্টেপ এর জন্য আপনি কিছুই করবেন না এটা তো কোন লজিক্যাল কথা হতে পারে না।
৭। কন্টেইনার অর্কেস্ট্রেশনঃ
আপনি যে ক্লাউড প্রোভাইডার এর কাছেই যান, শেষমেষ ডকার/কে৮ এগুলো দিয়েই কোড ডিপ্লয় করা লাগবে। তাইলে এগুলো সম্পর্কে ডিটিইলস লেভেলে জানা কেন আপনি ফেলে রাখছেন? ভার্চুয়ালাইজেশন কী, কেন, কীভাবে সেগুলো নিজে নিজে নিজের পিসিতে প্র্যাকটিস করার সাথে ক্লাউডের একাউন্টে টাকা খরচ করে ডিপ্লয় দেয়ার কোন পার্থক্য নাই ভাই। কেন বসে আছেন শুধু শুধু?
৮। মাইক্রোসার্ভিসঃ
মাইক্রোসার্ভিস বর্তমানে মেইন্সট্রিম ডেভেলপমেন্ট স্টাইল হয়ে যাচ্ছে। এই জিনিস এত বড় একটা কনসেপ্ট সেটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করার জন্য ক্লাউডের আশায় বসে থাকা বোকামী।
৯। আইডেন্টিটিঃ
অথেন্টিকেশন, অথোরাইজেশন, ও-অথ২, জেডাব্লিউটি এগুলো হল ক্লাউডে কাজ করার একেবারে ফাউন্ডেশন ব্লক। এগুলো সম্পর্কে জানা অবশ্যই দরকার ক্লাউডে কাজ শুরু করার আগে। এগুলো নিয়ে ডিপ নলেজ আছে আমাদের কয়জনের?
১০। আল্টারনেটিভসঃ
হ্যাঁ, কিছু কিছু সার্ভিস আছে যেগুলো ক্লাউড ছাড়া প্র্যাকটিস করা সম্ভবই না। যেমনঃ কসমসডিবি, এযুর সার্ভিস বাস এগুলোর জন্য এযুর একাউন্ট লাগবে। কিন্তু এগুলো এমন করে বানানো যেন এরা ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড এর বিরুদ্ধে না যায়। ফলে আপনি মঙ্গোডিবি দিয়ে কসমসডিবি প্র্যাকটিস করতে পারেন, এপাচি কাফকা ইউজ করে সার্ভিস বাস প্র্যাকটিস করতে পারেন।
উপসংহারঃ
আসলে আমাদের পড়াশোনা ও কাজ শেখার বিষয়টা আমাদের মনের ভিতরের ইচ্ছাশক্তির সাথে জড়িত। এটা সম্পুর্ন আমাদের হাতে যে, আমরা কাজ না শেখার জন্য হাজারটা এক্সকিউজ দিতে থাকবো নাকি আমরা হাজার হাজার প্রতিবন্ধকতা টপকে আমাদের চাওয়া টা পুর্ন করবো। এটা সম্পুর্ন আমাদের সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার যে, আমরা শুধুমাত্র বাংলায় ফ্রি কনটেন্ট পাইলেই শিখবো নাকি আমরা ওয়ার্ল্ড এর সেরা কনটেন্ট প্রভাইডারদের পিছনে কিছু টাকা খরচ করে আমাদের স্কিলকে আপ করবো।
ব্যার্থতাগুলো আমাদের ঘাড়ে নেয়ার সাহস আগে মনের ভিতরে আনতে হবে, তারপরেই আমরা সাফল্যের জন্য মানসিকভাবে রেডি হব। আর যে পরিশ্রম করে, দুনিয়ার কেউ তাকে থামিয়ে রাখতে পারে না। এটাই দুনিয়ার নিয়ম।
আমরা কী রেডী ক্লাউড এক্সপার্ট হওয়ার জন্য?
যদি মনে করেন কথা গুলো জরুরী, এবং উপকারী, তাহলে অন্যকে জানানোর অনুরোধ রইল। আর, কোন পয়েন্ট মিস করেছি এমন মনে হলে আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনাদের সাড়া পেলে এই পোস্টটি মাঝে মাঝেই ঘষামাজা করবো (আপডেট করবো) ইন শা আল্লাহ্, তাই চাইলে এই পোস্টটি বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।
আসসালামু আলাইকুম। 🙂
foyzulkarim@gmail.com
https://www.facebook.com/foyzulsacademy/
Top comments (9)
This is informative.
Offtopic: Not sure if dev.to allows posts in different language. If I knew, I would write a hundred posts. :(
the article is awesome for us specially Bangladeshi ppl, thnx Mr foyzul Karim, Hope in near future we ll get more Bengali tech content in this dev platform
"Where there's a will, there's a way". Again, I got remember this quote by reading this post :)
Thanks. Get more ideas about how to learn a new things without depend a resource.
Vi, How will I do app profiler on IIS localhost?
Please kindly do a Google search and let me know what you found. Thanks.
Good resourses
Insightful analysis!
Very informative. Thanks for sharing with us :)